fbpx

মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

১৯৭১ সালে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা অর্জনের পর আজ ৪৭ বছর বয়সের এই বাংলাদেশের বর্তমান অর্থ ব্যবস্থা অনেকাংশেই তৈরী পোশাক নির্ভর। যা একটি ভাল অর্থনীতির জন্য শুভ লক্ষন নয়। সস্তা শ্রম নির্ভর এই শিল্পের আগামীর যে লক্ষ্যমাত্রা তাও বিভিন্ন ধরণের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বিশেষ করে বিশ্ব বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, কাঁচামালের ক্ষেত্রে বিদেশ নির্ভরতা, প্রযুক্তির আবিষ্কার ও ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা এবং দক্ষ কর্মীবাহিনীর অভাব ইত্যাদি কারণে আমরা কোন কোন ক্ষেত্রে বানরের তৈলাক্ত বাঁশে উঠার অংকের মত তিন কদম এগিয়ে যাই তো দুই কদম পিছাতে হয়। এই অবস্থায় আমাদের সম্ভাবনাময় এই তৈরী পোশাক খাতকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করতে একদল মেধাবী ও সাহসী লোক নিরলস কাজ করে যাচ্ছে যা আমাদের জন্য আশার আলো জাগাতে পারে। আমরা এই অভিযাত্রীদের দলে থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে না পারলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের দায়ী থাকতে হবে।

তৈরী পোশাক কারখানার একটা গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের নাম হল “স্টোর” (Store)। কোন কোন কারখানায় এটির নাম “ওয়ার হাউজ” (Warehouse) আবার কোথাও কোথাও Godown বা গুদাম। নামের ব্যবধান যাই হোক না কেন কাজ কিন্তু কম বেশি একই রকম। যে কোন কারখানার প্রায় ৭০% – ৮০% চলতি মূলধন থাকে এই বিভাগের নিয়ন্ত্রণে, যার নিরাপত্তা ও সর্বোত্তম ব্যবহারের উপর নির্ভর করে একটি কারখানার পণ্য উৎপাদন ও উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান। স্টোর বিভাগের কার্যকর ভূমিকা যেমন উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে তেমনি এই বিভাগের দুর্বলতার কারণে হতে পারে বড় ধরণের আর্থিক এবং ব্যবসায়িক ক্ষতি। কিন্তু, অত্যন্ত পরিতাপের ও চিন্তার বিষয় হল এই বিভাগকে এখনো পর্যন্ত অনেক মালিক কিংবা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ঠিক সেই ভাবে মূল্যায়ন করেন না  যেভাবে তা করা উচিৎ। স্টোরের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে অনেকেই যেমন এটাকে কারখানার হৃৎপিণ্ড বলে থাকেন তেমনি অনেকেই অবহেলা করতে গিয়ে মনে করে থাকেন অপ্রয়োজনীয় দুষ্টচক্র। কারখানাতে প্রাকৃতিকভাবে একটাস্টোর থাকতেই হবে তাই রাখা হয়! এমনকি  এখানে কিছু দারোয়ান মার্কা লোক বসিয়ে দিয়ে অনেকেকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ করতে চান ! আমি মনে করি তারা বোকার স্বর্গেই বসবাস করেন। কারণ, একজন ভাল কুক সে যত পরিপক্কই  হোক না কেন, ভাল খাবার প্রস্তুতের জন্য তার দরকার ভাল উপাদান। পচা মাছ দিয়ে একজন  আন্তর্জাতিক মানের কুকও পারবেন না একটি ভাল খাবার তৈরী করতে। আর এই ভাল কাঁচামালের জোগানের কাজটায় সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখতে পারে স্টোর বিভাগ।

একটা আদর্শ স্টোরের কি কি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে তা নিয়ে আমাদের দেশে কোন পলিসি আপাতত নেই বললেই চলে। যাও বা  কিছু নির্দেশনা আছে তা  তাজরীন ফ্যাশন  এবং রানা প্লাজার বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে প্রস্তুত করা হয়েছে শুধুমাত্র কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত। যার উৎপাদনশীলতা বা কোয়ালিটি পণ্যের ক্ষেত্রে কোন ভুমিকা নেই। এটি শুধুই শ্রমিক  কিংবা কর্মরত জনবলের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট। আমি এখানে সংক্ষেপে একটি আদর্শ স্টোরের বৈশিষ্ট্য  সমূহ উল্লেখ করবো;

১। আলাদা দালান বা সেডঃ একটা আদর্শ স্টোরের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল স্টোর কারখানার মূল ভবন থেকে পৃথক হবে এবং বিএনবিসি কোড অনুযায়ী মিনিমাম দূরত্বে   হতে হবে। এতে করে মূল ভবনে কোন রকম দুর্ঘটনা হলেও কোম্পানীর কাঁচামাল অক্ষত থাকবে এবং দ্রুতই নিজেদেরকে আর্থিকভাবে গুছিয়ে নিতে পারবে। তবে অবস্থাগত দিক বিবেচনা করে মূল কারখানার সাথে স্টোরের যাতায়াতের স্থানটুকু ছাউনি দেয়া যেতে পারে যা সহজেই অপ্রয়োজনীয় সময় সরিয়ে নেয়া যাবে।

২। পর্যাপ্ত আলো বাতাসঃ স্টোর হবে পর্যাপ্ত আলো বাতাস সমৃদ্ধ। সম্ভব হলে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা রাখা স্টোরের জন্য অত্যন্ত  গুরুত্বপূর্ণ  বিষয়। এক্ষেত্রে দিনের আলোয় স্টোরের কাজ সমাপ্ত করার মত পলিসি রাখতে হবে। অন্যথায় কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং কোন অবস্থাতেই স্টোরের ভিতর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া যাবেনা। এমন কি স্টোর কর্মকর্তাদের অফিসও স্টোরের মূল দালান থেকে পৃথক হওয়া বাঞ্চনীয়। অনেকেই তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকান্ডের পর কোন বিকল্প ব্যবস্থা না করেই বেশিরভাগ পোশাক কারখানার স্টোরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন। যারা কারখানার অগ্নিকান্ড নিয়ে গবেষণা করেন তাদের কাছে প্রশ্ন, কয়টি কারখানায় স্টোর বিভাগে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে আগুন লেগেছে? সঠিক পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে যে কয়েক জায়গায় স্টোরে আগুন লেগেছে তার বেশিরভাগই পরিকল্পিত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত!

৩। পর্যাপ্ত স্থান বা জায়গাঃ প্রয়োজনীয় জায়গা না থাকা আমাদের দেশের পোশাক কারখানাগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। ফ্লোর থেকে শুরু করে স্টোর, কাটিং, ফিনিশিং, প্রিন্টিং, এমব্রয়ডারী, ওয়াশিং, আইডল মেশিন রাখার স্থান সবখানেই জায়গার অপ্রতুলতা এখন মহামারী রোগে পরিণত হয়েছে। এতে একদিকে কোম্পানীর উৎপাদনে বিগ্ন ঘটছে অন্যদিকে সামগ্রিক সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় এটার নেতিবাচক প্রভাব পরছে। ফলে প্রয়োজনীয় সময় দরকারী মালামাল খুঁজে পাওয়া যায়না। মেশিন ব্রেকডাউন টাইম বৃদ্ধি পায়। উৎপাদিত পণ্যে ডিফেক্টের হার বেড়ে যায়। ফলাফল স্বরূপ -রিচেক, লেট শিপমেন্ট, ডিসকাউন্ট এবং এয়ার শিপমেন্ট বৃদ্ধি পেয়ে কোম্পানীর আর্থিক ক্ষতি হয় আর কোম্পানির বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত  লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সমস্যা হয়।

মূলতঃ কারখানা স্থাপনের সময় আমাদের বিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার এবং এর ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতরা কিছু কিছু বিষয় একেবারেই এড়িয়ে যান। যা পরবর্তীতে কারখানার জন্য ক্যান্সার হয়ে দেখা দেয়। যেমন, খালি কার্টুন রাখার জন্য কোন জায়গা বা স্থান শুরুর পরিকল্পনাতে রাখেন না। এছাড়া আইডল মেশিন রাখার জায়গা রাখেন না অনেকেই। হ্যাঙ্গার এর জন্য অনেক বড় একটা জায়গা লাগে যা শুরুতে কেউ ধারনাও করেন না! সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হল “আবর্জনা” ও “জঞ্জালের” জন্য কোন সুনির্দিষ্ট জায়গা না রাখা। একটা কারখানায় বিভিন্ন রকম আবর্জনা তৈরী হয় যা পরবর্তীতে পরিকল্পনা মাফিক  আলাদা আলাদা ভাবে অপসারণ করা হয়। কিন্তু দুর্বল পূর্বপরিকল্পনার কারণে পরবর্তীতে পুরো কারখানায় তা রোগের মত ছড়িয়ে পড়ে। তাই একটা বাড়িতে যেমন সবার আগে টয়লেট দরকার তেমনি আবর্জনা/জঞ্জালের জন্য একটা মিনিমাম স্টোর দরকার। আর একটা কারণে আমাদের জায়গার অপ্রতুলতা দেখা দেয় আর তা হল, আমরা পরিকল্পনা করি জাপানের মত আর কাজ করি বাঙ্গালীর মত!

৪। লিখিত কর্ম নির্দেশনাঃ একটা লিখিত ও সুনির্দিষ্ট কর্ম নির্দেশনা থাকাটা একটা আদর্শ স্টোরের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। কর্মপন্থা না থাকলে এক এক জন ভিন্ন ভিন্ন আদেশ ও নির্দেশনা দিয়ে থাকেন এবং তা পরবর্তীতে নানা রকম সমস্যার জন্ম দেয়। একটি সুনির্দিষ্ট কর্ম নির্দেশিকা জনবলের মনোবল বাড়িয়ে দেয় এবং তারা নিজেদেরকে সুরক্ষিত ভাবে। অন্যথায় কার নির্দেশ না মানলে কি হবে এই ভয়ে তারা সংকুচিত হয়ে থাকে। এছাড়া অনেকেই অনৈতিক সুবিধাও নিতে চেষ্টা করে।

৫। পরিকল্পিত জনশক্তিঃ আমাদের দেশের তৈরী পোশাক শিল্পের স্টোরে বিভাগের সবচেয়ে বড় দুর্বলতাটা এই জায়গায়। এই বিষয়টাতে মালিকের কিংবা ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কোন পরিকল্পনা করেন না।কম লোক দিয়ে বেশী উৎপাদনের জন্য অর্থাৎ জনবল কমানোর জন্য সবার আগে টার্গেট করা হয় স্টোরেকে। বাস্তবতার আলোকেই বলছি, কত মেশিনের জন্য  স্টোরের জনবল কত হওয়া  দরকার এটার কোন স্ট্যান্ডার্ড রেফারেন্স যদি আপনি দেখাতে না পারেন তাহলে আপনাকে অপারেশন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জনবল দিতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি স্টোরে অধিক জনবল রাখার পক্ষে নই তবে পর্যাপ্ত জনবল না দিতে পারলে কর্মরত ভাল লোকগুলো নিরুৎসাহিত হয়ে  অন্যত্র চলে যাবে কিংবা অতিরিক্ত কাজের চাপে দিনে দিনে অসুস্থ হয়ে যাবে যা একটা কারখানার জন্য মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। তাই এই বিভাগে অর্গানোগ্রামের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে জনবল নিয়োগ দিলে তারা কাঙ্ক্ষিত  লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারবে। অন্যথায়

৬। জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি/ট্রেনিং পরিকল্পিতভাবে জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য এবং যাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাকে তার জন্য প্রস্তুত করার জন্য প্রয়োজনীয় ট্রেনিং ও কর্মশালার ব্যবস্থা করতে হবে। নিজেদের উদ্যোগে বা তৃতীয়পক্ষেরকোন ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে জনবলকে জনশক্তিতে পরিণত করার কোন বিকল্প নেই। অনেকেই মনে করে থাকেন, ট্রেনিং পাওয়ার পর লোকজন অন্যত্র চলে যাবে  তাই তাদেরকে ট্রেনিং না দিয়ে জ্ঞানশূন্য বোকা করে রেখে দিতে হবে। তারা বুঝতে পারনে না যে বোকার ধোকাটাতো আপনার কোম্পানীই খাচ্ছে =।

৭। মুল্যায়নঃ কর্মীর কর্ম মূল্যায়নের সময় বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠান  একটি মারাত্নক ভুল করে থাকেন আর তা হল, উৎপাদনের  সাথে জড়িত লোকদের অতি মূল্যায়ন আর অন্যদেরকে অবমূল্যায়ন করা। একদিকে যখন অর্ধ শিক্ষিত, কম শিক্ষিত লোকগুলো উৎপাদন বিভাগে যোগদান করে অপরদিকে তখন বেশী শিক্ষিত এবং সৎ – কর্মঠ  লোকগুলোকে অন্যান্য বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়। আর বছর শেষে সঠিক মূল্যায়ণ না করার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ লোক অন্যত্র চলে যান এবং তার পরিবর্তে  প্রায় দ্বিগুণ বেতনে  নতুন লোক নিয়োগ করা হয়। তাই যাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেই দায়িত্বের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করলে তা কোম্পানীর জন্য অধিক লাভজনক হবে। আর সত্যিকারের কাজের লোকেরা মূল্যায়িত হবে।

৮। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারঃ বর্তমান বিশ্ব যেমন প্রযুক্তি নির্ভর তেমনি ধীরে ধীরে হলেও পোশাক খাতেও প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই প্রযুক্তির ব্যবহার যারা যত তাড়াতাড়ি করতে পারবে তারা তত বেশী লাভবান হবে এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ইনভেন্টরী  সফটওয়্যার, বারকোড সিস্টেম, অটোমেশন ইত্যাদির ব্যবহার দ্রত বাড়ানো দরকার। সাথে সাথে দৈনন্দিন কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার বিধি ও এক্সেল এর উপর বিশেষ ট্রেনিং দেয়া দরকার। আমাদের দেশে অনেক কোম্পানীতে কম্পিউটার আছে নামে মাত্র এবং এর সঠিক ব্যবহার হয়না বললেই চলে।

৯। পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানঃ আমাদের দেশের পোশাক কারখানার স্টোরের আরেকটি বড় সমস্যা হল এটি এখনো স্বতন্ত্র কোন বিভাগ হয়নি। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই অর্থ বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকে স্টোর বিভাগ কিন্তু তাদের সমস্ত নির্দেশনা শুনতে হয় উৎপাদন বিভাগের। আবার উৎপাদন বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকলে তখন কাঁচামালের সঠিক হিসাব পাওয়া যায়না এবং পরবর্তীতে অনেক প্রয়োজনীয় কাঁচামাল অতিরিক্ত সরবরাহ করতে হয়। এই ক্ষেত্রে কোম্পানীর আয়তনের আলোকে স্বতন্ত্র বিভাগ হলে অনেক বেশী  উন্নত সেবা পাওয়া যাবে।

১০। দক্ষ কোয়ালিটি টীমঃ স্টোর বিভাগের একটি সুদক্ষ কোয়ালিটি টীম থাকতে হবে যারা বিভিন্ন সরবরাহকারী কর্তৃক সরবরাহকৃত কাঁচামালের গুণাগুণ যাচাই করে তা ব্যবহার উপযোগী কিনা তা নির্ধারণ করবে। এই ক্ষেত্রে কোয়ালিটি টীম দুর্বল হলে পরবর্তীতে অনেক বড় ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। মনে রাখতে হবে গুনগত মান নিশ্চিত না হয়ে কোন কাঁচামাল স্টোরে প্রবেশ করতে পারবে না। এই ক্ষেত্রে “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করাই শ্রেয়।

উপরোল্লিখিত বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ স্টোর এর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন হলে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি এক দিকে যেমন উক্ত কারখানার কাঁচামালের অপচয় রোধ হবে অন্যদিকে উৎপাদিত পণ্যের রিজেকশনের পরিমাণও অনেক কম হবে। এতে স্টোর বিভাগ সরাসরি উৎপাদনের সংখ্যার সাথে সম্পৃক্ত না হলেও উৎপাদনশীলতা ঠিক থাকবে ও কোয়ালিটি উৎপাদনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। কোম্পানীর আমদানীকৃত/সরবরাহকৃত মালামালের বিপরীতে অনুমোদিত কনজাম্পশন অনুযায়ী কাঁচামাল সরবরাহ করলে বছর শেষে অনেক কাঁচামাল জমানো সম্ভব যা দিয়ে একাধিক অর্ডার/স্টাইল কাঁচামাল আমদানী না করেই উৎপাদন ও শিপমেন্ট করা সম্ভব।

সর্বোপরি স্টোর নিয়ে আমাদের দেশের গতানুগতিক ধারণাগুলো থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। এটাকে খরচের খাত মনে না করে আয়ের খাত বিবেচনা করে সততা ও কর্মদক্ষতার সঠিক মূল্যায়ন করলে এই খাত কোম্পানীর লক্ষ্য অর্জনে আরো অধিক জোরালো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

লেখকঃ  Head of Store at Arkay Knit Dyeing Mills Ltd

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!