আখলাকুর রহমান
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!এক বন্ধুকে একটি লেখা দেবো দেবো বলে অনেক দিন চলে গেলো! কী নিয়ে লিখবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তো, কয়েকদিন আগে একটি লেখা আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। লেখাটিতে লেখক লিখেছিলেন যে, ব্র্যান্ড, বায়িং হাউজ বা প্রথাগত অডিট প্রতিষ্ঠানের অডিটরগণ কি-না অডিটে গিয়ে শুধু প্রশ্ন করে থাকেন। কোন কিছুর সমাধান দিতে চান না। আর সমাধান চাইলে, পরে যোগাযোগ করেন সহ নানা প্রকার বাহানা দেখান, ভাব দেখান! উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়ে উন্নয়ন না করে শুধু কারখানার ব্যবস্থাপনাকে চাপ প্রয়োগ করেন। কেউ কেউ না-কি মেজাজও দেখান বড্ড। অভিযোগের ভাষা দেখে আমার মনে হয়েছে তাঁরা প্রকৃত কাজের চেয়ে অকাজই করে যাচ্ছেন। অন্য দিকে যারা কারখানায় কাজ করেন, তাঁদের নামেও অভিযোগ কম নয়। তাঁদের প্রতিষ্ঠানে অডিট করার সময় আপডেট কিছু পাওয়া যায় না। সাধারণ অগ্নি মহড়ার নথিটা পর্যন্ত একই মহড়ার ফটো ক্রমান্বয়ে কয়েকটি মহড়ার নথিতে সংযুক্ত করা হয়! তাহলে কাহিনী ফিফটি ফিফটি হল, তাই না? আবার আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা হলো, ব্যবস্থাপকদের একটা বিরাট অংশ এখনো কর্মক্ষেত্রে আচরণ বিধিই (Work Place behavior)শিখেন নি বা জানেন না। তারা তাদের অধীনস্তদের সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে থাকেন যা অনেকসময় অপমানজনক ব্যবহারের পর্যায়ে পরে, আর এ ধরণের আচরণ ইদানিং একটা অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছে। যা কাম্য নয়।
অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ থাকতেই পারে। আমি বলবো, বিকশিত এই বিশাল শিল্প সেক্টরে অভিযোগগুলো দোষের কিছু নয়। বরং তা গঠনমূলকই বলা যায়। তাই আজকের এই আলোচনায়, উল্লেখিত সমস্যা সমাধানের পথ উত্তরণের চেষ্টা করবো। প্রথমেই বলতে হচ্ছে, দক্ষ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এমন একটি মৌলিক বিষয় যা কোন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকে অব্যাহত রেখে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্ত আমাদের দেশে এই ব্যবস্থাপনার কাজে লোক নিয়োগ করা হয় রেফারেন্স, আত্মীয়করণ ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে! এই অব্যবস্থাপনার কারণে, প্রথমেই প্রতিষ্ঠানে যোগ্য লোক বসানো সম্ভব হয় না এবং সেখানে থেকেই শুরু হয় গলদ! আবার প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স গুরুত্বপূর্ণ পদে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে যে ভূলটা করা হয় তা হলো, অদক্ষদের নিয়োগ দেয়া। কতিপয় আইন পাঠ ও বিভিন্ন প্রকার মৌলিক নীতিমালার পদ্ধতিগত ব্যবহার ও বিশ্লেষণ জানা এই পদগুলোর জন্য অত্যন্ত জরুরী। অথচ তারা প্রয়োজনীয় আইন ও নীতিমালার পদ্ধতিগত ব্যবহার ও বাস্তবিক প্রয়োগে দুর্বল কিংবা বলতে গেলে খুবই দুর্বল।
প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স (Administration/Corporate Social Responsibility/Compliance)পদে জনবল নিয়োগ করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টির ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া জরুরী তা হলো, যাদের ভালো কোন কমপ্লায়েন্স কারখানায় ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনীতে অন্তত এক বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই তাদের সরাসরি উক্ত পদ গুলোতে নিয়োগ না দেয়া এবং ব্র্যান্ড, বায়িং বা অডিট ফার্মে কমপক্ষে তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা যাদের নেই তাদের নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকা। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ালো, প্রতিষ্ঠানগুলো মানব সম্পদ পাবে কোথায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা অপেক্ষমাণ চাকুরি প্রার্থীরা কী করে চাকুরী পাবে? হ্যাঁ, প্রতিষ্ঠানগুলোও জনবল পাবে এবং চাকুরি প্রার্থীরাও চাকুরি পেতে পারে। আর সেই ক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি কোন পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ না করে বরং ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী (Management Trainee) পদ্ধতির মাধ্যমে প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে। ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী পদে তারা কমপক্ষে এক বছর কাজ করবে। এক্ষেত্রে আবার মনে রাখা প্রয়োজন, ঐ ট্রেইনী হিসাবে কর্মরত সময়ে তারা প্রতিটি সেকশনে কাজ করবে, যাতে তারা ঐ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তাদের ওপর অর্পিত নির্ধারিত এসাইনম্যান্ট (Assignment/Task) মানব সম্পদ (Human Resource) বিভাগে জমা করবে এবং মানব সম্পদ বিভাগ এসাইনম্যান্ট মূল্যায়ন করে তাদের জন্য উপযুক্ত সেকশনে স্থায়ী ভাবে নিয়োগদানের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল ক্ষেত্রে এসাইনম্যান্ট নকল বা কপি করার প্রবণতাই বেশী। ট্রেইনীরা কোন অবস্থায় যাতে এসাইনম্যান্ট নকল করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দক্ষতা অর্জন করতে হলে সততা প্রয়োজন, নিজের সাথে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। শুধু প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স বিভাগে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে নয়, প্রতিষ্ঠানের সকল বিভাগে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এই পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ করা শুরু করলে, আমি আশাবাদি একদিন দক্ষ জনবলের অভাব দুর হবে এবং অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ থেকে রেহাই পাবো আমরা।
বাস্তব জ্ঞান বিবর্জিত কেহ যদি অডিটর হন এবং অডিট মোকাবেলা করেন তবে পদাধিকারীদের জ্ঞান যা উল্লেখ করা হয়েছে, তা-ই হওয়ার কথা। যে সকল বিষয়ের ওপর অডিট করা হয় সেই সব টাস্কগুলো চলমান ও পরবির্তনশীল বিষয়। তাই সঠিক জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজন গবেষণা ও গবেষণার জন্য প্রয়োজন সময় ও মানসিকতা। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রকট যানজটের কারণে অডিটরগণ তাদের দৈনিক সময়ের একটা গুরুত্বরপূর্ণ সময় নষ্ট করে ফেলেন। আবার অপরদিকে কারখানায় নিয়োজিত কর্মকর্তাগণও সকাল থেকে রাত অবধি নানা প্রকার কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। গবেষণা ও নতুনত্বকে বরণ করার সময় কোথায়? প্রথম পক্ষ তাই তাড়াহুড়ো করেন আর দ্বিতীয় পক্ষ কাট-কপি-পেস্ট। এটাই বাস্তবতা। আবার দেখা যায় যে, তারা নির্দিষ্ট একটা গণ্ডির বাইরে কাজ করতে চান না। একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক হতে হলে, প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগের ওপর সাধারণ জ্ঞান থাকা জরুরী। যে জ্ঞান কেবল, ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী হয়ে কাজে প্রবেশ করলেই সম্ভব হবে। আবার কিছু কর্তা ব্যক্তি আছেন তারা অর্জিত জ্ঞান অন্যদের শিক্ষা দিতে মোটেও পছন্দ করেন না! অন্যদিকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা কারিকুলাম শিল্প সেক্টরে কাজের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরীতে ব্যর্থ হয়েছে ইতিমধ্যে। শিল্প সেক্টরের উপযুক্ত মানবসম্পদ তৈরীর কোন চেষ্টাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ইদানিং এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, দেশে উপযুক্ত ও দক্ষ জনবলের অভাবে প্রায় তিন লক্ষ বিদেশী জনবল আমদের দেশে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছেন এবং তাঁরা বছরে প্রায় ৪০হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা উচ্চ শিক্ষিতরা শিল্প সেক্টরে কাজের উপযোগী না হওয়াতে বেকারত্বের অভিশাপ বহন করতে হচ্ছে তাদের!
আমাদের দেশের শিল্প সেক্টরকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা, ভু-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, কাঁচামালের স্বল্পতা, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অদক্ষ কর্মী, কম উৎপাদনশীলতা সহ নানা মূথী সমস্যা নিয়েই চলতে হচ্ছে। দিন দিন ক্রেতাদের কর্তৃক পণ্যের দাম কমানো সহ দেশে দ্রব্যমূল্যের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির কারণে শিল্প সেক্টর ঝুঁকিপূর্ণ একটি সময় অতিক্রম করছে। এই ঝুঁকি মোকাবেলা করে, শিল্প সেক্টরকে সামনে নিয়ে যাওয়ার জন্য টেকসই ব্যপস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। আর টেকসই ব্যবস্থাপনা একদিনে তৈরী করাও সম্ভব নয়। আর টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য অভিযান শুরু করতে একাডেমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের যে ধারাবাহিক ক্রমানবতি, তা আর হবে কী করে? সরকারী ও বেসরকারী ভাবে মানবসম্পদ তৈরীর জন্য মানসম্মত ও ভালো প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন, প্রয়োজন অর্থের। অন্যদিকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকগণও মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য কোন প্রকার বাজেট বরাদ্দ রাখেন না। আর নিয়োগের সময় শুধু অভিজ্ঞতা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়,যা কাম্য নয়। আবার বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গও জ্ঞানের বিকাশ (Knowledge sharing)করতে উৎসাহী নয়। বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণদের নিয়ে একটি জ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (Hub of Knowledge Resource) প্রতিষ্ঠা করা যায়। তাই, প্রথাগতভাবে সৃষ্ট মানবসম্পদ দিয়ে টেকসই ব্যবস্থাপনা কী করে সম্ভব? আবার আধুনিক দক্ষ ব্যবস্থাপকেরা যাদের ওপর ব্যবস্থাপনা প্রয়োগ করছেন, তাদের সেই ব্যবস্থাপনা বোঝার ক্ষমতাও থাকতে হবে, তাই নয় কি? তাই শিল্পকে গতিময় রাখার জন্য যেমন টেকসই ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই তেমনি টেকসই ব্যবস্থাপনা তৈরীর জন্য সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়ন আবশ্যক।
এক বন্ধুকে একটি লেখা দেবো দেবো বলে অনেক দিন চলে গেলো! কী নিয়ে লিখবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তো, কয়েকদিন আগে একটি লেখা আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। লেখাটিতে লেখক লিখেছিলেন যে, ব্র্যান্ড, বায়িং হাউজ বা প্রথাগত অডিট প্রতিষ্ঠানের অডিটরগণ কি-না অডিটে গিয়ে শুধু প্রশ্ন করে থাকেন। কোন কিছুর সমাধান দিতে চান না। আর সমাধান চাইলে, পরে যোগাযোগ করেন সহ নানা প্রকার বাহানা দেখান, ভাব দেখান! উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়ে উন্নয়ন না করে শুধু কারখানার ব্যবস্থাপনাকে চাপ প্রয়োগ করেন। কেউ কেউ না-কি মেজাজও দেখান বড্ড। অভিযোগের ভাষা দেখে আমার মনে হয়েছে তাঁরা প্রকৃত কাজের চেয়ে অকাজই করে যাচ্ছেন। অন্য দিকে যারা কারখানায় কাজ করেন, তাঁদের নামেও অভিযোগ কম নয়। তাঁদের প্রতিষ্ঠানে অডিট করার সময় আপডেট কিছু পাওয়া যায় না। সাধারণ অগ্নি মহড়ার নথিটা পর্যন্ত একই মহড়ার ফটো ক্রমান্বয়ে কয়েকটি মহড়ার নথিতে সংযুক্ত করা হয়! তাহলে কাহিনী ফিফটি ফিফটি হল, তাই না? আবার আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা হলো, ব্যবস্থাপকদের একটা বিরাট অংশ এখনো কর্মক্ষেত্রে আচরণ বিধিই (Work Place behavior)শিখেন নি বা জানেন না। তারা তাদের অধীনস্তদের সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে থাকেন যা অনেকসময় অপমানজনক ব্যবহারের পর্যায়ে পরে, আর এ ধরণের আচরণ ইদানিং একটা অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছে। যা কাম্য নয়।
অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ থাকতেই পারে। আমি বলবো, বিকশিত এই বিশাল শিল্প সেক্টরে অভিযোগগুলো দোষের কিছু নয়। বরং তা গঠনমূলকই বলা যায়। তাই আজকের এই আলোচনায়, উল্লেখিত সমস্যা সমাধানের পথ উত্তরণের চেষ্টা করবো। প্রথমেই বলতে হচ্ছে, দক্ষ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এমন একটি মৌলিক বিষয় যা কোন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকে অব্যাহত রেখে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্ত আমাদের দেশে এই ব্যবস্থাপনার কাজে লোক নিয়োগ করা হয় রেফারেন্স, আত্মীয়করণ ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে! এই অব্যবস্থাপনার কারণে, প্রথমেই প্রতিষ্ঠানে যোগ্য লোক বসানো সম্ভব হয় না এবং সেখানে থেকেই শুরু হয় গলদ! আবার প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স গুরুত্বপূর্ণ পদে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে যে ভূলটা করা হয় তা হলো, অদক্ষদের নিয়োগ দেয়া। কতিপয় আইন পাঠ ও বিভিন্ন প্রকার মৌলিক নীতিমালার পদ্ধতিগত ব্যবহার ও বিশ্লেষণ জানা এই পদগুলোর জন্য অত্যন্ত জরুরী। অথচ তারা প্রয়োজনীয় আইন ও নীতিমালার পদ্ধতিগত ব্যবহার ও বাস্তবিক প্রয়োগে দুর্বল কিংবা বলতে গেলে খুবই দুর্বল।
প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স (Administration/Corporate Social Responsibility/Compliance)পদে জনবল নিয়োগ করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টির ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া জরুরী তা হলো, যাদের ভালো কোন কমপ্লায়েন্স কারখানায় ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনীতে অন্তত এক বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই তাদের সরাসরি উক্ত পদ গুলোতে নিয়োগ না দেয়া এবং ব্র্যান্ড, বায়িং বা অডিট ফার্মে কমপক্ষে তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা যাদের নেই তাদের নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকা। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ালো, প্রতিষ্ঠানগুলো মানব সম্পদ পাবে কোথায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা অপেক্ষমাণ চাকুরি প্রার্থীরা কী করে চাকুরী পাবে? হ্যাঁ, প্রতিষ্ঠানগুলোও জনবল পাবে এবং চাকুরি প্রার্থীরাও চাকুরি পেতে পারে। আর সেই ক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি কোন পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ না করে বরং ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী (Management Trainee) পদ্ধতির মাধ্যমে প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে। ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী পদে তারা কমপক্ষে এক বছর কাজ করবে। এক্ষেত্রে আবার মনে রাখা প্রয়োজন, ঐ ট্রেইনী হিসাবে কর্মরত সময়ে তারা প্রতিটি সেকশনে কাজ করবে, যাতে তারা ঐ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তাদের ওপর অর্পিত নির্ধারিত এসাইনম্যান্ট (Assignment/Task) মানব সম্পদ (Human Resource) বিভাগে জমা করবে এবং মানব সম্পদ বিভাগ এসাইনম্যান্ট মূল্যায়ন করে তাদের জন্য উপযুক্ত সেকশনে স্থায়ী ভাবে নিয়োগদানের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল ক্ষেত্রে এসাইনম্যান্ট নকল বা কপি করার প্রবণতাই বেশী। ট্রেইনীরা কোন অবস্থায় যাতে এসাইনম্যান্ট নকল করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দক্ষতা অর্জন করতে হলে সততা প্রয়োজন, নিজের সাথে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। শুধু প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স বিভাগে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে নয়, প্রতিষ্ঠানের সকল বিভাগে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এই পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ করা শুরু করলে, আমি আশাবাদি একদিন দক্ষ জনবলের অভাব দুর হবে এবং অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ থেকে রেহাই পাবো আমরা।
বাস্তব জ্ঞান বিবর্জিত কেহ যদি অডিটর হন এবং অডিট মোকাবেলা করেন তবে পদাধিকারীদের জ্ঞান যা উল্লেখ করা হয়েছে, তা-ই হওয়ার কথা। যে সকল বিষয়ের ওপর অডিট করা হয় সেই সব টাস্কগুলো চলমান ও পরবির্তনশীল বিষয়। তাই সঠিক জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজন গবেষণা ও গবেষণার জন্য প্রয়োজন সময় ও মানসিকতা। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রকট যানজটের কারণে অডিটরগণ তাদের দৈনিক সময়ের একটা গুরুত্বরপূর্ণ সময় নষ্ট করে ফেলেন। আবার অপরদিকে কারখানায় নিয়োজিত কর্মকর্তাগণও সকাল থেকে রাত অবধি নানা প্রকার কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। গবেষণা ও নতুনত্বকে বরণ করার সময় কোথায়? প্রথম পক্ষ তাই তাড়াহুড়ো করেন আর দ্বিতীয় পক্ষ কাট-কপি-পেস্ট। এটাই বাস্তবতা। আবার দেখা যায় যে, তারা নির্দিষ্ট একটা গণ্ডির বাইরে কাজ করতে চান না। একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক হতে হলে, প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগের ওপর সাধারণ জ্ঞান থাকা জরুরী। যে জ্ঞান কেবল, ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী হয়ে কাজে প্রবেশ করলেই সম্ভব হবে। আবার কিছু কর্তা ব্যক্তি আছেন তারা অর্জিত জ্ঞান অন্যদের শিক্ষা দিতে মোটেও পছন্দ করেন না! অন্যদিকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা কারিকুলাম শিল্প সেক্টরে কাজের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরীতে ব্যর্থ হয়েছে ইতিমধ্যে। শিল্প সেক্টরের উপযুক্ত মানবসম্পদ তৈরীর কোন চেষ্টাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ইদানিং এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, দেশে উপযুক্ত ও দক্ষ জনবলের অভাবে প্রায় তিন লক্ষ বিদেশী জনবল আমদের দেশে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছেন এবং তাঁরা বছরে প্রায় ৪০হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা উচ্চ শিক্ষিতরা শিল্প সেক্টরে কাজের উপযোগী না হওয়াতে বেকারত্বের অভিশাপ বহন করতে হচ্ছে তাদের!
আমাদের দেশের শিল্প সেক্টরকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা, ভু-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, কাঁচামালের স্বল্পতা, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অদক্ষ কর্মী, কম উৎপাদনশীলতা সহ নানা মূথী সমস্যা নিয়েই চলতে হচ্ছে। দিন দিন ক্রেতাদের কর্তৃক পণ্যের দাম কমানো সহ দেশে দ্রব্যমূল্যের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির কারণে শিল্প সেক্টর ঝুঁকিপূর্ণ একটি সময় অতিক্রম করছে। এই ঝুঁকি মোকাবেলা করে, শিল্প সেক্টরকে সামনে নিয়ে যাওয়ার জন্য টেকসই ব্যপস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। আর টেকসই ব্যবস্থাপনা একদিনে তৈরী করাও সম্ভব নয়। আর টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য অভিযান শুরু করতে একাডেমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের যে ধারাবাহিক ক্রমানবতি, তা আর হবে কী করে? সরকারী ও বেসরকারী ভাবে মানবসম্পদ তৈরীর জন্য মানসম্মত ও ভালো প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন, প্রয়োজন অর্থের। অন্যদিকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকগণও মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য কোন প্রকার বাজেট বরাদ্দ রাখেন না। আর নিয়োগের সময় শুধু অভিজ্ঞতা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়,যা কাম্য নয়। আবার বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গও জ্ঞানের বিকাশ (Knowledge sharing)করতে উৎসাহী নয়। বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণদের নিয়ে একটি জ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (Hub of Knowledge Resource) প্রতিষ্ঠা করা যায়। তাই, প্রথাগতভাবে সৃষ্ট মানবসম্পদ দিয়ে টেকসই ব্যবস্থাপনা কী করে সম্ভব? আবার আধুনিক দক্ষ ব্যবস্থাপকেরা যাদের ওপর ব্যবস্থাপনা প্রয়োগ করছেন, তাদের সেই ব্যবস্থাপনা বোঝার ক্ষমতাও থাকতে হবে, তাই নয় কি? তাই শিল্পকে গতিময় রাখার জন্য যেমন টেকসই ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই তেমনি টেকসই ব্যবস্থাপনা তৈরীর জন্য সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়ন আবশ্যক।
এক বন্ধুকে একটি লেখা দেবো দেবো বলে অনেক দিন চলে গেলো! কী নিয়ে লিখবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তো, কয়েকদিন আগে একটি লেখা আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। লেখাটিতে লেখক লিখেছিলেন যে, ব্র্যান্ড, বায়িং হাউজ বা প্রথাগত অডিট প্রতিষ্ঠানের অডিটরগণ কি-না অডিটে গিয়ে শুধু প্রশ্ন করে থাকেন। কোন কিছুর সমাধান দিতে চান না। আর সমাধান চাইলে, পরে যোগাযোগ করেন সহ নানা প্রকার বাহানা দেখান, ভাব দেখান! উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়ে উন্নয়ন না করে শুধু কারখানার ব্যবস্থাপনাকে চাপ প্রয়োগ করেন। কেউ কেউ না-কি মেজাজও দেখান বড্ড। অভিযোগের ভাষা দেখে আমার মনে হয়েছে তাঁরা প্রকৃত কাজের চেয়ে অকাজই করে যাচ্ছেন। অন্য দিকে যারা কারখানায় কাজ করেন, তাঁদের নামেও অভিযোগ কম নয়। তাঁদের প্রতিষ্ঠানে অডিট করার সময় আপডেট কিছু পাওয়া যায় না। সাধারণ অগ্নি মহড়ার নথিটা পর্যন্ত একই মহড়ার ফটো ক্রমান্বয়ে কয়েকটি মহড়ার নথিতে সংযুক্ত করা হয়! তাহলে কাহিনী ফিফটি ফিফটি হল, তাই না? আবার আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা হলো, ব্যবস্থাপকদের একটা বিরাট অংশ এখনো কর্মক্ষেত্রে আচরণ বিধিই (Work Place behavior)শিখেন নি বা জানেন না। তারা তাদের অধীনস্তদের সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে থাকেন যা অনেকসময় অপমানজনক ব্যবহারের পর্যায়ে পরে, আর এ ধরণের আচরণ ইদানিং একটা অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছে। যা কাম্য নয়।
অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ থাকতেই পারে। আমি বলবো, বিকশিত এই বিশাল শিল্প সেক্টরে অভিযোগগুলো দোষের কিছু নয়। বরং তা গঠনমূলকই বলা যায়। তাই আজকের এই আলোচনায়, উল্লেখিত সমস্যা সমাধানের পথ উত্তরণের চেষ্টা করবো। প্রথমেই বলতে হচ্ছে, দক্ষ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এমন একটি মৌলিক বিষয় যা কোন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকে অব্যাহত রেখে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্ত আমাদের দেশে এই ব্যবস্থাপনার কাজে লোক নিয়োগ করা হয় রেফারেন্স, আত্মীয়করণ ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে! এই অব্যবস্থাপনার কারণে, প্রথমেই প্রতিষ্ঠানে যোগ্য লোক বসানো সম্ভব হয় না এবং সেখানে থেকেই শুরু হয় গলদ! আবার প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স গুরুত্বপূর্ণ পদে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে যে ভূলটা করা হয় তা হলো, অদক্ষদের নিয়োগ দেয়া। কতিপয় আইন পাঠ ও বিভিন্ন প্রকার মৌলিক নীতিমালার পদ্ধতিগত ব্যবহার ও বিশ্লেষণ জানা এই পদগুলোর জন্য অত্যন্ত জরুরী। অথচ তারা প্রয়োজনীয় আইন ও নীতিমালার পদ্ধতিগত ব্যবহার ও বাস্তবিক প্রয়োগে দুর্বল কিংবা বলতে গেলে খুবই দুর্বল।
প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স (Administration/Corporate Social Responsibility/Compliance)পদে জনবল নিয়োগ করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টির ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া জরুরী তা হলো, যাদের ভালো কোন কমপ্লায়েন্স কারখানায় ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনীতে অন্তত এক বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই তাদের সরাসরি উক্ত পদ গুলোতে নিয়োগ না দেয়া এবং ব্র্যান্ড, বায়িং বা অডিট ফার্মে কমপক্ষে তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা যাদের নেই তাদের নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকা। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ালো, প্রতিষ্ঠানগুলো মানব সম্পদ পাবে কোথায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা অপেক্ষমাণ চাকুরি প্রার্থীরা কী করে চাকুরী পাবে? হ্যাঁ, প্রতিষ্ঠানগুলোও জনবল পাবে এবং চাকুরি প্রার্থীরাও চাকুরি পেতে পারে। আর সেই ক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি কোন পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ না করে বরং ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী (Management Trainee) পদ্ধতির মাধ্যমে প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে। ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী পদে তারা কমপক্ষে এক বছর কাজ করবে। এক্ষেত্রে আবার মনে রাখা প্রয়োজন, ঐ ট্রেইনী হিসাবে কর্মরত সময়ে তারা প্রতিটি সেকশনে কাজ করবে, যাতে তারা ঐ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তাদের ওপর অর্পিত নির্ধারিত এসাইনম্যান্ট (Assignment/Task) মানব সম্পদ (Human Resource) বিভাগে জমা করবে এবং মানব সম্পদ বিভাগ এসাইনম্যান্ট মূল্যায়ন করে তাদের জন্য উপযুক্ত সেকশনে স্থায়ী ভাবে নিয়োগদানের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল ক্ষেত্রে এসাইনম্যান্ট নকল বা কপি করার প্রবণতাই বেশী। ট্রেইনীরা কোন অবস্থায় যাতে এসাইনম্যান্ট নকল করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দক্ষতা অর্জন করতে হলে সততা প্রয়োজন, নিজের সাথে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। শুধু প্রশাসন/সিএসআর/কমপ্লায়েন্স বিভাগে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে নয়, প্রতিষ্ঠানের সকল বিভাগে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এই পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ করা শুরু করলে, আমি আশাবাদি একদিন দক্ষ জনবলের অভাব দুর হবে এবং অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ থেকে রেহাই পাবো আমরা।
বাস্তব জ্ঞান বিবর্জিত কেহ যদি অডিটর হন এবং অডিট মোকাবেলা করেন তবে পদাধিকারীদের জ্ঞান যা উল্লেখ করা হয়েছে, তা-ই হওয়ার কথা। যে সকল বিষয়ের ওপর অডিট করা হয় সেই সব টাস্কগুলো চলমান ও পরবির্তনশীল বিষয়। তাই সঠিক জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজন গবেষণা ও গবেষণার জন্য প্রয়োজন সময় ও মানসিকতা। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রকট যানজটের কারণে অডিটরগণ তাদের দৈনিক সময়ের একটা গুরুত্বরপূর্ণ সময় নষ্ট করে ফেলেন। আবার অপরদিকে কারখানায় নিয়োজিত কর্মকর্তাগণও সকাল থেকে রাত অবধি নানা প্রকার কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। গবেষণা ও নতুনত্বকে বরণ করার সময় কোথায়? প্রথম পক্ষ তাই তাড়াহুড়ো করেন আর দ্বিতীয় পক্ষ কাট-কপি-পেস্ট। এটাই বাস্তবতা। আবার দেখা যায় যে, তারা নির্দিষ্ট একটা গণ্ডির বাইরে কাজ করতে চান না। একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক হতে হলে, প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগের ওপর সাধারণ জ্ঞান থাকা জরুরী। যে জ্ঞান কেবল, ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনী হয়ে কাজে প্রবেশ করলেই সম্ভব হবে। আবার কিছু কর্তা ব্যক্তি আছেন তারা অর্জিত জ্ঞান অন্যদের শিক্ষা দিতে মোটেও পছন্দ করেন না! অন্যদিকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা কারিকুলাম শিল্প সেক্টরে কাজের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরীতে ব্যর্থ হয়েছে ইতিমধ্যে। শিল্প সেক্টরের উপযুক্ত মানবসম্পদ তৈরীর কোন চেষ্টাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ইদানিং এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, দেশে উপযুক্ত ও দক্ষ জনবলের অভাবে প্রায় তিন লক্ষ বিদেশী জনবল আমদের দেশে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছেন এবং তাঁরা বছরে প্রায় ৪০হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা উচ্চ শিক্ষিতরা শিল্প সেক্টরে কাজের উপযোগী না হওয়াতে বেকারত্বের অভিশাপ বহন করতে হচ্ছে তাদের!
আমাদের দেশের শিল্প সেক্টরকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা, ভু-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, কাঁচামালের স্বল্পতা, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অদক্ষ কর্মী, কম উৎপাদনশীলতা সহ নানা মূথী সমস্যা নিয়েই চলতে হচ্ছে। দিন দিন ক্রেতাদের কর্তৃক পণ্যের দাম কমানো সহ দেশে দ্রব্যমূল্যের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির কারণে শিল্প সেক্টর ঝুঁকিপূর্ণ একটি সময় অতিক্রম করছে। এই ঝুঁকি মোকাবেলা করে, শিল্প সেক্টরকে সামনে নিয়ে যাওয়ার জন্য টেকসই ব্যপস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। আর টেকসই ব্যবস্থাপনা একদিনে তৈরী করাও সম্ভব নয়। আর টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য অভিযান শুরু করতে একাডেমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের যে ধারাবাহিক ক্রমানবতি, তা আর হবে কী করে? সরকারী ও বেসরকারী ভাবে মানবসম্পদ তৈরীর জন্য মানসম্মত ও ভালো প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন, প্রয়োজন অর্থের। অন্যদিকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকগণও মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য কোন প্রকার বাজেট বরাদ্দ রাখেন না। আর নিয়োগের সময় শুধু অভিজ্ঞতা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়,যা কাম্য নয়। আবার বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গও জ্ঞানের বিকাশ (Knowledge sharing)করতে উৎসাহী নয়। বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণদের নিয়ে একটি জ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (Hub of Knowledge Resource) প্রতিষ্ঠা করা যায়। তাই, প্রথাগতভাবে সৃষ্ট মানবসম্পদ দিয়ে টেকসই ব্যবস্থাপনা কী করে সম্ভব? আবার আধুনিক দক্ষ ব্যবস্থাপকেরা যাদের ওপর ব্যবস্থাপনা প্রয়োগ করছেন, তাদের সেই ব্যবস্থাপনা বোঝার ক্ষমতাও থাকতে হবে, তাই নয় কি? তাই শিল্পকে গতিময় রাখার জন্য যেমন টেকসই ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই তেমনি টেকসই ব্যবস্থাপনা তৈরীর জন্য সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়ন আবশ্যক।
পরিবেশবিদ ও কমপ্লায়েন্স প্রফেশনাল